পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিওআরআই এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিওআরআই এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর  অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনষ্টিটিউট (বিওআরআই) এর মধ্যে আজ রোববার একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বিওআরআই সমুদ্র নিয়ে গবেষণাকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২৭জন সমুদ্র বিজ্ঞানী এর গবেষণা কাজের সাথে জড়িত। অনুষ্ঠানে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন ও বিওআরআই এর পক্ষে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার সমঝোতা স্মারকে স্মাক্ষর করেন। সমঝোতা স্মারক চুক্তির আওতায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা সমুদ্র সংক্রান্ত গবেষণা কাজে বিওআরআই এর সকল ধরনেল সহযোগিতা পাবেন। তাদের গবেষণাকর্ম এক সাথে পাবলিকেশন করাও হবে।

সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকালে গ্রন্থাগার ভবনের ভার্চুয়াল রুমে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন এবং বিওআরআই এর মহাপরিচালক সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ রাহিদুল ইসলাম রাহি।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিন সায়েন্স স্থাপন করেন। যেটি সমুদ্র নিয়ে গবেষণা কারী প্রথম প্রতিষ্ঠান, যারা এখনো কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের বঙ্গোপসাগরে সম্পদের ব্যাপক প্রাচুর্য্য রয়েছে। সেই সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগানোর জন্য সরকার ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনষ্টিটিউট স্থাপন করেছে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা খুবই উপকৃত হবেন। তারা সমুদ্র নিয়ে গবেষণা করতে পারবেন। প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত, দক্ষ হবেন। সম্মিলিত চেষ্টায় স্মার্ট রিসার্স করতে পারবে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে ভূগোল ও পরিবেশের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক উপকার হবে। রিসার্স পাবলিকেশন করতে গেলে আমরা ঢিলা হয়ে যাই। কিন্তু গবেষকদের রিসার্স পাবলিকেশন করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, আজকের সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক বড় পাওয়া। এর মাধ্যমে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যাব। আজকের দিনটি বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণ। আমরা অচিরেই ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরির সাথে সমঝোতা স্মারক করবো। পল্লী উন্ননয়ন একাডেমি (আরডিএ) এর সাথে সমঝোতা স্মারক হবে। এ মকল উন্নয়নের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিং বাড়বে, তাতে জ্ঞানের সমৃদ্ধি বাড়বে। প্রচার বাড়বে। সাফল্যমন্ডিত হবে আমাদের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। যে কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা হলে তা প্রকাশ হওয়া দরকার। তাহলে সবাই তা দেখবেন, এর মাধ্যমে কাজটা এগিয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান বলেন, পৃথিবীর চারভাগের তিনভাগ জল। আজেকের পৃথিবীর আবহাওয়ার পরিবর্তন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলির একটি। এর সাথে সমুদ্র জড়িত। আমরা ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমুদ্র জয় করেছি। এখন বঙ্গোপসাগর থেকে আমাদের সম্পদ আহরণ করতে হবে। সেজন্য প্রচুর গবেষণা ও প্রযুক্তিবিদ দরকার। এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন গবেষক পাবো। যারা সমুদ্রকে জানতে, বুঝতে সাহায্য করেব। এরাই দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি যারা সমুদ্রকে আমাদের কাছে নতুন করে তুলে ধরবে।

বিশেষ অতিথি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন বলেন, শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের তৃঞ্চা বাড়াবে আজকের সমঝোতা স্মারক চুক্তির মাধ্যমে। নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ২০১২ সালে মায়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্র জয়ের পরের অর্থনীতির নতুন দুয়ার খুলে গেছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। সমুদ্র নির্ভরশীল অর্থনীতির জন্য দক্ষ মানব সম্পদ, প্রযুক্তিবিদ গড়ে তুলতে হবে। এই সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন নতুন গবেষণা, উদ্ভাবন পাবো আমরা। সুনীল অর্থনীতির উপর নির্ভর করে দেশ এগিয়ে যাবে।
সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, বর্তমানে সুনীল অর্থনীতির উপর সরকার খুব জোড় দিচ্ছেন। সমুদ্রের নীচে যে সম্পদ রয়েছে তার বিস্তারিত আমরা জানতে পারছি না। এ ধরনের সমঝোতার মাধ্যমে এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে পারবেন, তাতে তাদের দক্ষতা বাড়বে। নতুন নতুন গবেষণার মাধ্যমে সমুদ্রকে আমরা আরো ভালোভাবে জানতে পারব। এতে দেশ উপকৃত হবে। দেশের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। সমুদ্র বিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আরো বেশি জানতে পারবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ন কবির, রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয়ের রেজাউর রহিম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজিবুর রহমান, পল্লী উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক মেহেদী হাসান,রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন,বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক ড. মোঃ নাজমুল ইসলাম। অতিথিদের ক্রেষ্ট ও সম্মাননা জানানো হয়।