এক ফসলী জমি হবে তিন ফসলী জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিকশীর বিলে খাল পুনঃখননের উদ্বোধন
নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ঘিরে বিশাল ডিকশীর বিলের অবস্থান। বিলের মাঝখান দিয়ে রয়েছে একটি ক্যানেল বা খাল। যেখান দিয়ে বর্ষা মৌসুমের পানি ও কচুরিপানা স্রোতে চলে যেতো। কিন্তু বর্তমানে পলি জমে বন্ধ হয়ে গেছে খাল। বর্ষা মৌসুমে এখন পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কচুরিপানা আটকে থাকে সারা বিলে।
ফলে গত পাঁচ বছর ধরে একটি ফসলও চাষাবাদ করতে না পারায়, অনাবাদি পড়ে থাকছে প্রায় তিন হাজার বিঘা জমি। অপূরণীয় ক্ষতির এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের দাবি ছিল ক্যানেল বা খালটি পুন:খননের। অবশেষে কৃষকদের সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। ডিকশীর বিলের বন্ধ হয়ে যাওয়া খাল পুন:খননের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে ডিকশীর বিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে খাল পুন:খনন উদ্বোধন করে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার। পরে দোয়া করা হয়।
এরপর সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহলের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, চাটমোহর ক্ষুদ্র সেচ জোন বিএডিসি চাটমোহরের সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা, ফৈলজানা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
আলাপকালে স্থানীয় কৃষক আছান আলী, মজিবর রহমান, আবুল কাশেম সহ কয়েকজন কৃষক জানান, বর্ষা শেষে পানি নেমে গেলেও বিলের মাঝখানে অন্তত ৩ হাজার বিঘা জমির পানি না নামায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কচুরিপানায় ভরে থাকে। এতে ফসল চাষাবাদ করা যায় না। এবার খাল খননের মাধ্যমে সেই দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই মিলবে।
বিএডিসি চাটমোহরের সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, প্রকল্পের আওতায় ডিকশীর বিল থেকে চিকনাই নদী পর্যন্ত চার কিলোমিটার খাল পুন:খনন করা হবে। এর মাধ্যমে বিলে দীর্ঘদিন ধরে যে জলাবদ্ধতা ছিল সেটি দূর হবে। সেইসাথে ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাপ্যতা বাড়বে। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা নির্বাহী মমতাজ মহল বলেন, পানি বের হতে না পারায় কৃষকের চরম অসুবিধা হতো। ক্যানেলটা খনন হলে পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে, কৃষক তত দ্রুত চাষাবাদ শুরু করতে পারবে। এখানকার জমি খুব উর্বর। কিন্তু পানি বের হতে না পারায় কৃষকের ফসল আবাদ এত বছর ব্যাহত হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুম থেকে সে সমস্যা আর থাকবে না আশা করি।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, এই বিলের হাজার হাজার কৃষকের প্রাণের দাবি ছিল ক্যানেল বা খালটি পুন:খননের। আমি তাদের দাবির প্রেক্ষিতে চেষ্টা করেছি। এজন্য বিএডিসি পানাসি প্রকল্পের ডিডি ও জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। তারা এ কাজে সহযোগিতা করেছেন। এর মাধ্যমে কৃষকরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন। এক ফসল থেকে তিন ফসল আবাদ করতে পারবেন। খালের মাছ মানুষ খাবে। এদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন হওয়ার ক্ষেত্রে এ বিলের একটা অবদান থাকবে।