প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণ বর্ণাঢ্য আয়োজনে ড্রামা সার্কল’র বাংলা নতুন বছর বরণ

প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণ বর্ণাঢ্য আয়োজনে ড্রামা সার্কল’র বাংলা নতুন বছর বরণ

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বিগত বছরগুলোর মতো এবছরও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নতুন বছর ২০৩০ সালকে বরণ করে নিলো নিউইয়র্কে বাংলা সংস্কৃতি বিকাশে সুপরিচিত সংগঠন ড্রামা সার্কল। বর্সবলন উপলক্ষ্যে গত এর বর্ষবরণের গত ৩০ এপ্রিল রোববার সিটির কুইন্সপ্যালেসে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। আয়োজকদের দাবী অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের ৫ শতাধিক প্রবাসীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি জমজমাট হয়ে উঠে। উল্লেখ্য, গত ২৯ বছর ধরেই ড্রামা সার্কল পহেলা বৈশাখের দিনই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। কিন্তু এবছর পবিত্র রমজানে পহেলা বৈশাখ পড়ার কারনে ঈদের এক সপ্তাহ পর অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। এছাড়াও প্যাান্ডামিক এর সময় গত দু’তিন বছর ছাড়া বাংলা বর্ষবরণ আয়োজন সম্ভব হয়নি। খবর ইউএনএ’র।

প্রবাসের সংস্কৃতিমনা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত ড্রামা সার্কল’র বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান মানেই আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে উৎসবের আমেজে নানান রঙের বর্ণিল অনুষ্ঠান। বৈশাখী পোষাকে, নববর্ষের সেরা সাজে বর্ণাঢ্য আয়োজন। অনুষ্ঠান জুড়েই ছিলো উৎসবের রঙ। সকলে মিলে আনন্দে উৎসবের মাধ্যমে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানানো।

এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচীর মধ্যে ছিলো পান্তা-ইলিশ ভোজ, শুভেচ্ছা বক্তব্য আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়াও ছিলো ফেস পেইন্ট, বৈশাখী স্টল, পিঠার স্টল সহ নানান আয়োজন।

ড্রামা সার্কল’র সভাপতি আবীর আলমগীরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই সন্ধ্যা ৭টায় পান্তা-ইলিশ ভোজ পর্বের সুচনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান।

মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় রাত ৮টায়। এসময় নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড্রামা সার্কল এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলাদেশ সোসাইিটি নিউইয়র্ক এর সাবেক সভাপতি ও নার্গিস আহমেদ। এরপর একে একে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, উৎসব.কম এর সিইও রায়হান জামান, টাউন এমডি মেডিক্যাল-এর রাহাত মুক্তাদির, সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাগর ও ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোমকেয়ার এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নিউজ প্রেজেন্টার শামসুন্নাহার নিম্মি, এটর্নী মঈন চৌধুরী, মোর্তুজা কামাল সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সোসাইটি’ সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, আশা হোম কেয়ার-এর সিইও ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমান ও নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বর্ষবরণ আয়োজন উপ কমিটির আহবায়ক রুকসান আরা ও সদস্য সচিব নিশাত খাজা।

সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতেই উদ্বোধনী বৈশাখী আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করে ড্রামা সার্কল এর শিল্পীরা। বিশেষ পরিবেশনা ‘বাংলার ঢোল’ সমবেত ঢোল বাদনে অংশগ্রহন করে বাংলাদেশের তিন ঢুলি শফিকুল ইসলাম, মোবারক ইসলাম ও নজরুল ইসলাম। নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস-বিপা, নীলা ড্যান্স একাডেমী, অনুপ কুমার ড্যান্স একাডেমী ও অন্তরা সাহা ড্যান্স গ্রুপের শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী করেন চন্দন চৌধুরী, লেমন চৌধুরী, তানভির শাহীন, ফারহানা তুলি, জাফরিন আবেদীন এবং আনোয়ারা আনা ও তার তিন পুত্র। শিল্পীদের গান বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কন্ঠে বাংলা গান উপস্থিত সকলেই মুগ্ধ করে। কীবোর্ডে ছিলেন মাসুদ রানা এবং তবলা ও ঢোলে শফিক।
অনুষ্ঠানের আবৃত্তি পর্বে অংশ নেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ডা. ফারুক আজম ও নাহরিন ইসলাম।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে পান্তা-ইলিশ ভোজের ইলিশ স্পন্সর করেন ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোমকেয়ার-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট শামসুন্নাহার নিম্মি ও সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাগর এবং পান্তা ও বিভিন্ন পদের ভর্তা স্পন্সর করে এআরএ রিয়েলটি সার্ভিসেস।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী-আমেরিকান মালিকানাধীন ফ্রেশ পারাটার সৌজন্যে ৬ জন-কে সেরা সাজের জন্য বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করা হয়। পোষাক পরিকল্পনা করে বাংলাদেশের ‘গোধুলীয়া’।