আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলি বেগমের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চোখের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তরকালে এই নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান।

ঘর হস্তান্তরকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা। এসময় স্বামী পরিত্যক্তা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলি বেগম বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, সংসারকালে রোগে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তখন তার স্বামী তাকে ও তার সন্তানকে রেখে অন্যত্র চলে যায়। পরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বাবা জায়গা জমি বিক্রি করেও চোখের চিকিৎসা শেষ করতে পারেনি।

এসময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চোখের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ঢাকা আই হসপিটালে খোঁজ নিতে বলেন। এসময় তার চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা করার কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. আসাদুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে পাবনা জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬৪৬টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাবনা জেলাকে ‘ক’ শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে এবার পাবনার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চাটমোহরে ৭৮টি, ভাঙ্গুড়ায় ৪১টি, ফরিদপুরে ১১৩টি, সুজানগরে ৫৩টি, বেড়ায় ৩৬১টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। ইতিমধ্যে উপকারভোগী বাছাই করে তাদের কবুলিয়াত ও নামজারী সম্পন্ন হয়েছে। সেইসাথে তাদের দখলও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য দেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ের প্রথমধাপে ৩ হাজার ৯টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রদান করা হয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ে জেলায় ১ হাজার ৫১৮টি ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ১ম ধাপে গত ২২ মার্চ ৮৭২টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। আর ২য় ধাপে প্রদান করা হলো ৬৪৬টি ঘর।

এর আগে চারটি উপজেলা ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, সাঁথিয়া ও পাবনা সদর উপজেলাকে ইতিমধ্যে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর এবার বাকি পাঁচটি উপজেলা চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বেড়া, সুজানগরকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হলো।এর মাধ্যমে পুরো জেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হলো।

অনুষ্ঠানে পাবনা প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, পাবনা জেলা প্রশাসক মু: আসাদুজ্জামান, পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসীসহ স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।