বিচিত্র জীবন – মাহমুদা সুলতানা

বিচিত্র জীবন – মাহমুদা সুলতানা

বিচিত্র জীবন
– মাহমুদা সুলতানা

আজকাল আমি গাঢ় রঙের শাড়ি পরি না। অভ্যাসটা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। হঠাৎ করে আলমারির শাড়ির ভাঁজে পেলাম নীল রঙের একটা শাড়ি। আমি অবাক হলাম। শাড়িটা গায়ে জড়ালাম। খারাপ লাগলো না। খুশিও হলাম না।
নিতু আমাদের পাড়ায় থাকে। ও তো আমাকে দেখে অবাক। কিরে এতো সুন্দর শাড়ি পরেছিস। খুব ভালো লাগছে। বললাম, আমার ভালো লাগছে না।

কেন?
তাতো জানি না।
নিতু বললো, কপালে একটা নীল রঙের টিপ পরতে হবে।
হাসলাম, বললাম, আকাশের দিকে তাকিয়ে দ্যাখ।
কি দেখবো?
কী রং দেখতে পাচ্ছিস।
নীল রং।
ওই আকাশ আমায় নীল রঙ পরিয়ে দেবে।
সত্যি নাকি?
হ্যাঁ খুব সত্যি।

কিন্তু তা আর হলো না। তাকিয়ে দেখি, আকাশের মন খারাপ। বড্ড একলা ওই আকাশ। ঠিক আমার মতো।
আকাশ আমায় বললো, তুমি মেঘের কাছে যাও। মেঘ তোমার মন ভালো করে দেবে। শ্রাবনের মেঘ। বৃষ্টি হবে।
কিন্তু তাতো হলো না। দমকা বাতাস এলো হঠাৎ করে। তাতেই মেঘ উধাও। আর বৃষ্টি হলো না। আমার মনটাও ভালো হলো না।
তাহলে মন ভালো হবে কী করে? ভাবছি, শুধু ভাবছি। হঠাৎ শুনি পায়রারা আমায় ডাকছে। ওরা বলছে, চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা আছি তোমার কাছে।

তাই তো পায়রারাই তো আমার প্রিয় বন্ধু। ওদের ডাক শুনলেই আমার মন ভালো হয়ে যায়।
তাই হলো! এখন নীল শাড়ি আমার গায়ে নেই। হালকা রঙের ধূসর রঙের শাড়ি আমার পরনে। টিপেরও প্রয়োজন নেই। আমি যেমন ছিলাম তেমনই আছি। এমনই আমি থাকতে চাই।
১৪ নভেম্বর ২০২২