শেখ হাসিনার কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা বিশ্বের রোলমডেল – হীরেন পণ্ডিত

শেখ হাসিনার কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা বিশ্বের রোলমডেল – হীরেন পণ্ডিত

দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ আজ স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বের রোলমডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বলেছেন, কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের চাবিকাঠি। সকলের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর এ প্রচেষ্টাকে সহায়তার জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বহুপাক্ষিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোসহ আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি-ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবায় তাদের সহায়তার হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ইউএনজিএ’র ৭৮তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অফ কমিউনিটি ক্লিনিক : ইনোভেটিভ এপ্রোচ এচিভিং ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি’ শীর্ষক উচ্চ-পর্যায়ের সাইড-ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন ও সর্বজনীন স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই বছর শপথ নেওয়ার সময় আমরা আপনাদের উপস্থিতিতে উৎসাহিত বোধ করছি।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে হিসেবে বাংলাদেশ অর্থপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে ইস্যুটিতে চ্যাম্পিয়ন হবে। তিনি
বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে, বাংলাদেশ আগ্রহীদের সাথে উপলব্ধি এবং দক্ষতা বিনিময় করতে প্রস্তুত আছে। সকল সুখের
মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারদিকে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞদের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ-যারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং এই মুহূর্তে তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করি যে, এই সাইড ইভেন্ট স্বাস্থ্য এবং আমাদের সকল জনগণ ও কমিউনিটির কল্যাণে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের আরেকটি নিদর্শন হয়ে থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রীর দশটি অসাধারণ উদ্যোগের অন্যতম একটি কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি যে একটি অনন্য সাধারণ মডেল ও উদ্যোগ তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি শিরোনামে জাতিসংঘে উত্থাপিত ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য
উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ কে আরও একবার সম্মানে ভূষিত করল যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল অব ব্রাউন
ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের ডিন মুকেশ কে জৈন দ্য লোটে এই উদ্যোগকে ২০৩০ সালের
মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন,
এটি কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার একটি সফল মডেল। এটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন,
কমিউনিটি সম্পৃক্ততা উন্নয়নের মাধ্যমে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিধির জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি।

প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশজুড়ে স্থাপিত হয়েছে ১৪,৫০০ এর বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক, যা গ্রামীণ সমাজের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এনেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বিপ্লব প্রচেষ্টায়
অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ।

স্বাধীনতার পরেই প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে বঙ্গবন্ধু সরকার। তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে বিকেন্দ্রীকরণের পদক্ষেপ হিসেবে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর মাধ্যমে ধাপে ধাপে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। ১৯৯৬ সালে শেখ ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ

হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। তবে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে আবারও রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কাজ আবার শুরু হয়। সর্বজনীন মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ হিসেবে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার মডেল আন্তর্জাতিকভাবে হলো সমাদৃত।

‘রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ’ নামের প্রকল্পের আওতায় ক্লিনিকগুলো মেরামত, নতুন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং ওষুধ সরবরাহ করার মাধ্যমে ক্লিনিকগুলো চালু করা হয়েছিল। কমিউনিটি ক্লিনিক হচ্ছে সরকারের সর্বনিম্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুসারে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়।

সার্বিক প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা নারী প্রসবপূর্ব প্রতিষেধক টিকাদানসহ এবং প্রসবপরবর্তী (নবজাতকের
সেবাসহ) সেবা প্রদানকারী কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সময়মতো যক্ষ্মা রোগের প্রতিষেধক টিকাদান, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হাম, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়া, কুষ্ঠ, কালা-জ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং সেগুলোর সীমিত চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করছে। এছাড়া জ্বর, ব্যথা, কাটা, পোড়া, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, ক্রিমি এবং চোখ, দাঁত ও কানের সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে লক্ষণভিত্তিক প্রাথমিক চিকিৎসাও প্রদান করা হচ্ছে। এখান থেকে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা দেয়া হয়। এখান থেকে বিনা মূল্যে ৩১ ধরনের ওষুধ পায় মানুষ। সেখানে রয়েছে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি), প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী, ইন্টারনেট সার্ভিস, ই-হেলথ, টেলিমেডিসিনসহ আনুষঙ্গিক সহায়তা। ক্লিনিকগুলো পরিচালনা করেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার। এ পদে স্থানীয় নারী কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর আরও একটি বিশেষ উদ্যোগ ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করছে
কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। বাড়ির কাছেই সহজে, বিনামূল্যে নির্ভরযোগ্য, আস্থাশীল সেবা পাওয়ার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং পরিবারের হাসপাতাল হয়ে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে স্বাস্থ্যসেবাকে ঘিরে সরকার গৃহীত উদ্যোগগুলো। করোনা মহামারিতে সর্বস্তরের জনগণের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে বিনা মূল্যে করোনার টিকার ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ সরকার সমগ্র বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অন ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন’ প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ হিসেবে ভূষিত করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য সাময়িকী ল্যানসেটের গবেষণায় স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ ও মানসূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল ও আফগানিস্তানের ওপরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য

খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যুহার হ্রাস, শিশুমৃত্যুহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আরও বলেছেন, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ সব উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবার মান সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে একটি আদর্শ মডেল হিসেবে কাজ করবে।

একসময় স্বাস্থ্য খাতে প্রায় সব সূচকে তলানিতে ছিল বাংলাদেশ। সেই দেশ এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় টপকে গেছে ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ আরো বহু দেশকে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের এই ক্রমোন্নতি পুরো বিশ্বের কাছেই বিস্ময় হয়ে উঠেছে। ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এখন যেন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য স্বাস্থ্য খাতকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি আদর্শ ‘ব্লুপ্রিন্ট’।

কমিউনিটি ক্লিনিক দেশের সর্বিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ সরকার ভবিষ্যতে এ সেবা
কার্যক্রম আরও আধুনিকায়নের জন্য প্রয়োজনীয় নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার
সুযোগ আরো বাড়ছে। নিশ্চিত হচ্ছে প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’-কে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে এক অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে এক অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেল এই রেজুলেশনের মাধ্যমে। এটা বাংলাদেশের সবার জন্য গর্বের।’ প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্ভাবনী চিন্তাকে জাতিসংঘের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়া বা স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার তৈরি হয়েছে, সেগুলো সবই কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেই শুরু। কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবার মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, গর্ভবতী এবং প্রসুতির স্বাস্থ্য, নবজাতক এবং শিশুদের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, পুষ্টি সেবা, ইপিআই কার্যক্রম পরিচালনা। সংক্রামক-অসংক্রামক যাবতীয় রোগের চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক একটা অসাধারণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন
করেছে। ‘বাংলাদেশে আমরা যে বলি ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে, সে ক্ষেত্রে এই কমিউনিটি
ক্লিনিক বড় মাইল ফলক।’

বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে উল্লেখ করে। এটি জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।  সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই
রেজুলেশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ এটি সদস্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই কমিউনিটি
ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক

উন্নয়ন ব্যাংক ও দাতাদের যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক