উন্নয়ন অগ্রযাত্রার জন্য সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করাও অত্যন্ত জরুরি – হীরেন পণ্ডিত

উন্নয়ন অগ্রযাত্রার জন্য সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করাও অত্যন্ত জরুরি – হীরেন পণ্ডিত

আগামী সংসদ নির্বাচন যে কোন মূল্যে অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অবাধ. নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই নির্বাচনের দিকে। শক্ত হাতে দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্যভাবে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করাও জরুরি। তিনবার ক্ষমতায় থাকার পর চতুর্থবারের জন্য ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার জন্য যে কোন দেশেই ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা যাতে থেমে না যায় সেজন্য দেশবাসীর সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করাও অত্যন্ত জরুরি। একটি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে দেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা বজায়
থাকে।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন এবং বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারকে দেশের বিরোধীদলসহ বিশ্বের অনেক জায়গায় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সবার ধারণা সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগ ২০১৮
সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করত। তবে এই সমালোচনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবার। অনেকে গাজীপুর ও রংপুরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা তোলেন। এগুলো স্থানীয় নির্বাচন, স্থানীয় নির্বাচনে অনেক বিষয় থাকে, এটাকে জাতীয় নির্বাচনে মিলানোর কোন সুযোগ নেই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর অসম্পূর্ণ স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়ন, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল চালু করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গসমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাকশিল্প, ওষুধশিল্প, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক বেড়েছে।

এ সরকারের মেয়াদকালে গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- করেছেন। ফলে এ সময় বেড়েছে তার জনপ্রিয়তাও সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিউটের (আইআরআই) এক জরীপে দেখা গেছে। বাংলাদেশের মপ্রাপ্তবয়স্ক জনগণের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অংশ মনে করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোভাবেই তার
কাজ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে শতকরা ৭০ জন সমর্থন করেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে। তবে দেশের মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ মনে করে দেশ সঠিক পথেচলছে। বিপরীতে ৫৩ শতাংশ মানুষই মনে করে দেশ ভুল পথে চলছে। আইআরআইয়ের এই জরিপে নমুনা হিসেবে ১৮ থেকে ৫৬ বছরের বেশি ৫ হাজার লোককে বাছাই করা হয়েছিল। এই ৫ হাজার জনের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৬৩৩ জন এবং নারী ২ হাজার ৩৬৭ জন। অঞ্চল বিবেচনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গ্রামাঞ্চলের ৩ হাজার ৪৫০ জন এবং বাকি ১ হাজার ৫৫০ জন শহরের বাসিন্দা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হলে ভোট দিতে আগ্রহ আছে মানুষের। উত্তরদাতাদের ৯২ শতাংশই বলেছেন, তারা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তবে এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা ‘খুব সম্ভবত’ ভোট দিতে পারবেন।

যারা ভোট দিতে চান না, তারা মূলত নির্বাচনে জালিয়াতি এবং ভোটার নিবন্ধন-সংক্রান্ত সমস্যাকে ভোটদানের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, নিয়ে গেছেন উন্নয়নশীল
দেশের কাতারে। তিনি বা তাঁর দল ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালে পরিণত হবে স্মার্ট বাংলাদেশে। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তাঁর নেতৃত্বাধীন দল ও সরকারে অন্য যাঁরা আছেন, তাঁদের অনেকের কাজে
মানুষের অসন্তোষ থাকতে পারে, কিন্তু শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন।

আগামী নির্বাচন ঘিরে দেশে-বিদেশে কিছু নেতিবাচক তৎপরতা এই সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশি ও বিদেশি কুচক্রী মহল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক ভূমিকায় নেমেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও এই মুহূর্তে একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিভিন্ন বহিস্থ কারণই মূলত দায়ী। দেশের কতিপয়
দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী ও কুচক্রী মহলের এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে।

দেশের ব্যাংক খাতকে এরই মধ্যে একটা সংকটে রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির জন্যও এই মহল দায়ী। শেখ হাসিনা আছেন জাতির কান্ডারি হিসেবে। তাঁর প্রতি সমর্থন অটুট রয়েছে মানুষের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
ভাবমূর্তি যতটা উজ্জ্বল, তাঁর সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁদের কাজে জনসাধারণের মনে অনেকের ব্যাপারে অনেকের কাজে জনঅসন্তোষ রয়েছে।

মানুষ দুর্নীতি নিয়ে চিন্তিত। বেকারত্ব ও দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে। শেখ হাসিনার সহকর্মীরা সবাই যদি তাঁর সঙ্গে
যথাযথভাবে সমন্বয় করে কাজ করেন, একই মনোভাব নিয়ে পথ চলেন, তাহলে জরিপে উঠে আসা এসব নেতিবাচক দিকগুলো কাটিয়ে উঠা যাবে। তবে বিতর্কিত ও জনপ্রিয় নয় এমন নেতাদের অনেককেই এবার মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এটি একটি ভালো উদ্যোগ হিসেবে দেখছে জনগণ।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও সংসদ সদস্যকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন না দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন সাংসদ ও নেতাকে মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নিজস্ব বলয় তৈরি, এলাকায় সংগঠনকে দুর্বল করা, নারী কেলেঙ্কারি, পারিবারিক দ্বন্দ্বে সামাজিক মর্যাদাহানি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও, অডিওসহ কথোপকথনের রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় এবং বিভিন্ন সংস্থার জরিপে তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ারঅযোগ্য বিবেচিত হতে পারেন। সামনের নির্বাচনটা অনেক চ্যালেঞ্জিং এই নির্বাচনে জনগণের কাছে উন্নয়ন তুলে ধরেই ভোটে বিজয়ী হতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আগামী নির্বাচনে বিতর্কিত নয়, সৎ, শিক্ষিত, মেধাবী, ত্যাগী, পরীক্ষিত ও গ্রহণযোগ্যরাই দলীয় মনোনয়ন দিতে হবে। শেখ হাসিনা তাঁর পিতার মতোই দৃঢ়ভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। এ দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনিই ছিলেন অগ্রভাগে। দেশের গরিব- দুঃখী মানুষের বেদনাও তিনিই সবচেয়ে গভীরভাবে অনুভব করেন। দেশের অর্থনীতি পরিচালনার দিকেও
রয়েছে তাঁর দৃষ্টি। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয় ২৭৬৫ মার্কিন ডলার।

বৈশ্বিক সংকটকালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং দেশকে খুব ভালোভাবে পরিচালনা করছেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে ও আংশিক উদ্বোধন হবে আগামী মাসে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল। মহাকাশেও বাংলাদেশ তার অবস্থান ঘোষণা করেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু উদ্বোধন দু’টিই উন্নয়নের মাইলফলক। সফলভাবে কারোনা মহামারি মোকাবেলা, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বিশ্বে ৫ম। শিক্ষা, যোগাযোগ অবকাঠামো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সামাজিক
কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতনের শিকার নারীদের সহায়তা, অটিজম, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদান উল্লেখযোগ্য।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭টি পরিবারকে ঠিকানা গড়ে দেওয়া হয়েছে আগস্ট মাস পর্যন্ত। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫ জনের এবং পুনর্বাসিত পরিবারগুলিকে তিন মাসের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়নসহ ও বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে সরকার। প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে আনয়ন, দারিদ্র্যের হার হ্রাস ৪০ থেকে ১৮ তে নেমেছে। সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করা, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতিদান, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও চিকিৎসাব্যবস্থার আধুনিকায়ন।

এই উন্নয়ন কর্মকা- জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য চারটি ভিত্তি সফলভাবে বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এগুলো হলো-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এর পাশাপাশি হাতে নেওয়া হয়েছে ২১০০ সালের বদ্বীপ কেমন হবে- সেই পরিকল্পনা। স্মার্ট বাংলাদেশে সব কাজ, সম্পাদন করা হবে প্রযুক্তির মাধ্যমে। যেখানে প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে হবে দক্ষ। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ।

স্মার্ট সিটি ও স্মার্ট ভিলেজ বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট ট্রান্সপোর্টেশন, স্মার্ট ইউটিলিটিজ, নগর প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত ১৫ বছরে দেশকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ও বাংলাদেশ বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটেও অন্য দেশগুলোর মতো বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সংকটে না পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি এই সময়ে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্ত অবস্থানে নিতে পেরেছেন। তা না হলে ১৭ কোটি মানুষের দেশটাকে এই সংকটকালেও বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা বেশ কঠিন হতো।

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা, উন্নয়ন, আত্মমর্যাদা, গৌরবময় অহংকারের অনেক কিছু দিতে পেরেছে। তবে এখন অনেকের অভিযোগ আজন্ম আওয়ামী লীগ করেও দলীয় ক্ষমতার স্বাদ পাননি। তেমনি অনেকে হঠাৎ এসে
উড়ে এসে জুড়ে বসে ষোল আনাই ভোগ করে ক্ষমতার স্বাদ নিচ্ছেন। এখন সাবেক আমলা, ব্যবসায়ী ও হাইব্রিডদের জয়-জয়কার বলে অনেকের অভিযোগ বা মনোকষ্ট রয়েছে। এখনো অভিযোগ পাওয়া যায় দল ক্ষমতায় এলে মহাদুঃসময়ের দুঃখী কর্মীদের খবর দল নেয় না।

মন্ত্রীরা এমপিরা তাদের আর চেনেন না। সাধারণ মানুষের কাছে ভিড়তে চান না। দলীয় কোনো সুবিধা-লাভ দূরে থাক তাদের রাজনৈতিক মূল্যায়নটুকুও হয় না। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বুকভরা অভিমানে রয়েছেন। তবে একটি বড় দলে বিভিন্ন পর্যায়ের আমলা, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহসহ অনেকেই থাকতে পারেন। সবার উদ্দেশ্য দেশের কল্যাণ।

সবার সমন্বয়েই কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। এটাই আওয়ামী লীগ এবং এটাই আওয়ামী লীগের শিক্ষা। আওয়ামী লীগের ইতিহাস যেমন সংগ্রামের ইতিহাস, আবার সেই সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগই পারে একটি দেশকে উন্নত করতে বা এগিয়ে নিয়ে যেতে, যেভাবে এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যত অশুভ শক্তি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করুক, না কেন বাঙালি এগিয়ে যাবে অগ্রযাত্রার পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

বাংলাদেশের জনগণ কখনই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না। আমাদের সব সময় মনে
রাখতে হবে, এ দেশ আমাদের। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। জনগণের সমর্থনের কারণে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবেই এগিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশ যখন উন্নয়নের সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে তখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির দোসররা অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারি। কারও কাছে মাথা আমরা মাথা
নত করবো না, কারও কাছে মাথা নত করে আমরা চলব না’। আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বারবার বলেছেন, সেই সম্পদটুকু কাজে লাগিয়েই আমরা বিশ্বসভায় আমাদের নিজেদের আপন মহিমায় আমরা গৌরবান্বিত হবো, নিজেদের গড়ে তুলব এবং সারাবিশ্বের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে চলব। এটাই হবে এ দেশের মানুষের জন্য সবদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এভাবেই এগিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তরুণরা গড়ে তুলছে ছোট-বড় আইটি ফার্ম, ই-কমার্স সাইট, অ্যাপভিত্তিক সেবাসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখন স্বপ্ন নয় এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। একমাত্র আওয়ামী লীগ এ দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো