যুগে যুগে দেশী-বিদেশী গুজব আর অপপ্রচারের কবলে বাংলাদেশ । হীরেন পণ্ডিত

যুগে যুগে দেশী-বিদেশী গুজব আর অপপ্রচারের কবলে বাংলাদেশ । হীরেন পণ্ডিত

স্বাধীনতার আগে থেকেই বাংলাদেশ গুজবের কবলে ছিলো, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও হয়তোবা থাকবে। সব সময় দেশি-বিদেশী গুজব আর ষড়যন্ত্রের কবলে বাংলাদেশ। এমনো গুজব ছড়ানো হচ্ছে যাতে মনে হয় সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কোনো কোনো গুজবে সরকার পতনের দিন তারিখ পর্যন্ত লিখে দেয়া হচ্ছে। বরাবরই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা দেখা গেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে, ভিত্তিহীন এমন গুজব রটিয়ে সারাদেশে ছেলে ধরা সন্দেহ অন্তত ২২ জনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ব্যাংকে রিজার্ভ নেই, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে, এমন গুজব ছড়িয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়। এই অপরাধে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ চারজনকে আইনের আওতায় আনে। তারা স্বীকার করেছে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর আগে কুমিল্লা, রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দিনাজপুরে গুজব ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি ও অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করে একটি চক্র। এমন গুজব নিয়ে পরিস্থিতি নাশকতায় রূপ নেয়।

দেশের শিক্ষার্থীদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে- এমন দাবি করে সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব
ছড়িয়েছে। এখনো প্রায় প্রতিটি পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালানো হয়। বাংলাদেশে অপপ্রচারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সাল থেকেই। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সদ্য স্বাধীন এই দেশটি যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে সফলতার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছিল ঠিক তখনই কুড়িগ্রামের শ্রবণ ও বাক্ধসঢ়; প্রতিবন্ধী বাসন্তী বালাকে মাছের জাল পরিয়ে সংবাদপত্রে ছবি ছাপানো হয়েছিল। ফলে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির অপতৎপরতায় অস্থির, অসন্তুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জর্জরিত বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে আরো বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল।

১৯৭৪ সালের পর অর্ধ শতাব্দী হতে চললো কিন্তু গুজব ও অপপ্রচারের উপস্থিতি অটুটই রয়ে গেছে। দেশ স্বাধীনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পক্ষে নিষ্ঠুর যুক্তি; ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ভিক্টিমরা নিজেরাই ব্যাগে গ্রেনেড নিয়ে যাওয়ার ভুয়া খবর প্রচারের পক্ষে যুক্তি; বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষার জন্য ইনডেমনিটি আইন পাস করার পক্ষে যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা তো হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে জন্মগ্রহণ করে এবং তারপর থেকে, এটি যে উন্নয়নমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ শুধু সব বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়নি বরং এখন বৈশ্বিক পরিম-লে এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে এটি অন্যান্য অনেক অনুরূপ বা তুলনাযোগ্য দেশগুলোর জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে উঠেছে, অনেকে বাংলাদেশের সাফল্যকে অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে গুজব এবং কলকাঠি নেড়ে করা হচ্ছে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র। ব্যবহার করা হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আর রয়েছে ক্ষমতাশালী লবিস্ট গ্রুপের তৎপরতা।

মার্কিন ভিসানীতির পর গুজব ছড়ানোর ধারা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। দেশ ও বিদেশ থেকে একটি চক্র পরিকল্পিভাবে ছড়াচ্ছে এসব গুজব। বেশিরভাগ গুজবই তৈরি হচ্ছে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এবং উস্কানিমূলক। উদ্দেশ্য সরকারকে বিব্রত করা, দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা
এবং প্রশাসনের মনোবল ভেঙে দেয়া। সরকারের দিক থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, এসব গুজব-অপপ্রচার ঠেকানোর নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে প্রযুক্তিতে দক্ষ সরকারবিরোধী সাইবার কর্মীরাই গুজব ছড়ানোর কাজে লিপ্ত হয়েছে। টার্গেট করে ব্যক্তিগত বিষয়াদি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দেশের চিন্তাশীল মানুষের বিরুদ্ধে প্রচার করা হয় কল্পকাহিনী। তরুণ প্রজন্মের বিরাট একটি অংশই টার্গেট। আগামী নির্বাচনে যাতে এই তরুণরা অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে চিন্তা করতে না পারে, সেই বিষয়গুলো বেছে বেছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

যাতে জনগণ অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও এসব দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব সময়ই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে গুজব রটানো হয়। তারা এসবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নিয়ে থাকেন। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়। আগামী নির্বাচনে গুজব ঠেকানো হবে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিষয়টি মাথায় রেখেই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরে বসেও সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী নানা অপপ্রচার চলছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও ব্রিটেন থেকে কিছু পেজ ও ব্লকে মনগড়া তথ্য দিয়ে লেখা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে বহির্বিশ্বের
বাংলা ভাষাভাষী মানুষও এসব গুজবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এসব অপপ্রচারের মূল টার্গেট ছিলো-আওয়ামী লীগ বা সরকারের প্রতি জনগণকে উস্কে দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া। সরকার সতর্কতার সঙ্গে বিষয়গুলো মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। একটি গ্রুপ নিজস্ব মনগড়া তথ্য দিয়ে ফেসবুকে ভিউ বাড়াতেই দেশে-বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কুচক্রী মহলের এ ধরনের অপপ্রচারে সরকারি কর্মকর্তাদের মনোবল ভাঙবে না। সঠিক তথ্য প্রচার করুন। গুজব ছড়ানো মানবিকভাবে খারাপ কাজ, আইনগতভাবে অপরাধ। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। যারাই গুজব রটাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সাময়িকভাবে গুজব রটিয়ে হয়তো পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছে, তবে সেটি হতে দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবগুলো সংস্থা সজাগ রয়েছে।

২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিস্থিতি ঘোলাটে করার পাঁয়তারা করেছিল। পুলিশের সদর দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, যাদের ফেসবুক, ইউটিউবের ফলোয়ার বেশি, সেসব আইডি বা পেজে কোনো বিষয় পোস্ট করলে অল্প সময়ের মধ্যে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই মিথ্যা তথ্যটি সহজে ছড়িয়ে পড়েছে। এগুলো সব সময়ই মনিটরিং করা হয়। নির্বাচনের সময় কিংবা দেশের কোনো পরিস্থিতিতে এসব আইডি থেকে কোনো মিথ্যা, ভিত্তিহীন, মনগড়া তথ্য দিয়ে গুজব রটানো হয় কিনা, সেটি মনিটরিং করা হবে।

এছাড়া পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইউনিট টিম রয়েছে। প্রতিটি টিম প্রতিনিয়ত গুজব রটানোকারীদের আইনের আওতায় আনছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা মুখে যাই বলুন গুজব নিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছেছে। সবার হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ। তাই অনলাইন ব্যবহার করে মানুষ এখন হারিয়ে যাচ্ছে এক জগৎ থেকে আরেক জগতে। থানা পুলিশেরও অন্য অপরাধ সামলাতে গিয়ে সাইবার অপরাধ নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রমশ সাইবার অপরাধ বাড়ছে। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার, ডিবি সাইবার ও র‌্যাবের সাইবার ইউনিটসহ পুলিশের সাইবার টিম এসব নিয়ে কাজ করছে।

যারাই গুজব রটাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সাইবার টিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিনিয়ত মনিটরিং করে। এটি অব্যাহত থাকবে। গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব বিষয়ে কাজ
করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বেশকিছু সাইট বন্ধ করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারের সঙ্গে ত্রৈমাসিক সভা করা হয়। আগে এমন বৈঠক হতো না। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি-মার্চে টিকটক, টুইটার ও ফেসবুক ও ইউটিউবের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে আপত্তিকর কনন্টেট, মনগড়া তথ্য দিয়ে পোস্ট করা লিংক সরানোর অনুরোধ করা হয়েছে। তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। এতে সংস্থাগুলো রিপ্লাইও দিচ্ছে। শুধু নির্বাচনকালীনই নয়; বিটিআরসি সব সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাইবার সংক্রান্ত সহায়তা চাইলে সহযোগিতা করা হয়।

২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রে আছে। দেশের অভ্যন্তরে যেমন একটি গোষ্ঠী সব সময় জনগণের মধ্যে সরকার বিরোধী একটি
মনোভাব তৈরি করবার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, ঠিক তেমনিভাবে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিদেশে বিভিন্ন
দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থান তৈরি করবার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। কোনো কোনো রাষ্ট্রদূত কখনো কখনো
বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিষয়ে সবক দিচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের ৫টি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে ৩টি চীন, জাপান ও ভারত এশিয়ায়। এশিয়ান জায়ান্টদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিশেষ করে চীন, দ্রুত বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার বণ্টনকে নতুন আকার দিচ্ছে। বাংলাদেশ, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত একটি দেশ। বাংলাদেশ মানবাধিকারের প্রতি তার অঙ্গীকারের জন্য জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বে প্রশংসিত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকারের অগ্রগতি ও সংরক্ষণে বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টা ও অঙ্গীকারকে সর্বাধিক ভোটে মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত করে বিশ্ব সম্প্রদায় স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার ও নির্বাচনের বর্তমান পরিস্থিতি জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের যে ৬ কংগ্রেসম্যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন ঢাকা তাদের সাথে যোগাযোগ করবে। অপপ্রচারে যাতে জনগণ বিভ্রান্ত না হয়, সেজন্য অপপ্রচারের জবাব এবং সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার বিরোধী অপপ্রচার নিয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোও তৎপর হয়ে উঠেছে। যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের উদ্যোগেও এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের উদ্যোগে সাইবার ব্রিগেড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাইবার ব্রিগেডের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন প্রচারসহ গুজব প্রতিহত করা হবে। গুজব ও অপপ্রচারের জবাব দিতে সরকার সজাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নীতি নির্ধারকরা। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে প্রচারের পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গঠন করা হচ্ছে-বিশেষ তথ্য-প্রযুক্তি সেল। সেলের মাধ্যমে কেন্দ্র এবং তৃণমূল নেতাদের কাছে সরকারবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সঠিক জবাব বা তথ্য এবং সরকারের উন্নয়ন চিত্রের আদান-প্রদান করা হচ্ছে। যেকোনো অপপ্রচার বা গুজবের জবাব তৃণমূল নেতারাই দিতে পারেন। যাতে জনগণ কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এসব গুজব প্রতিহত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

বিভিন্ন সাইবার ব্রিগেড সব সময় এসব অপপ্রচারের জবাব দিয়ে আসছে। আগামী নির্বাচনে যারা রাষ্ট্র ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গুজব রটাবে, তাদের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সাইবার ব্রিগেড টিম যখনই অপপ্রচার দেখে, তখনই এর সঠিকতা, সত্যতা তুলে ধরছে। এটি প্রতিনিয়ত করা হবে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই ভুয়া খবর-এর সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। কিছু মানুষ মিডিয়াকে ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। তবে সরকারের সমালোচনা করা এক বিষয় আর দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা অন্য বিষয়। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা হতেই পারে কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা যায়না। দেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিষয়ে কোনো কথা নেই। পৃথিবীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের জীবনমান উন্নত হয় সেটা প্রমাণিত। আজ পর্যন্ত যে পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হয়েছে, আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। অনেকেই চায় না আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। সেজন্য নানা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক