যেভাবে চাঞ্চল্যকর দু’টি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলার রাঙ্গালিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে রিমন সরকার (২৮), আতাইকুলা থানার স্বরুপপুর গ্রামের কাজী আহম্মদে আলীর ছেলে আকমল হোসেন (৪৫) এবং আতাইকুলা থানার গয়েশবাড়ী গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে চরমপন্থি নেতা রফিকুল ইসলাম (৪০)।
পুলিশ সুপার জানান, ভাঙ্গুড়ার চৌবাড়িয়া হারোপাড়ার মৃত সোবাহান সরদারের ছেলে হাসিনুর রহমান হাসু প্রথম স্ত্রী মানসিক অসুস্থ থাকায় পরিবারের সম্মতিতে ২য় বিয়ে করেন সাজেদা খাতুনকে। সম্প্রতি বনিবনা না হওয়ায় এক কন্যা সন্তানের জননী সাজেদা খাতুনকে তালাক দেন হাসু। কিন্তু স্বামীর সাথে ফের সংসার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন সাজেদা। এতে ব্যর্থ হয়ে এক কবিরাজের দেয়া তাবিজ ১৫ আগস্ট দিবাগত রাতে সাবেক স্বামী হাসুর বাড়িতে পুঁতে রাখতে বোন জামাই রিমন সরকারকে পাঠান তিনি। সেই তাবিজ পুঁতে রাখতে গিয়ে হাসুর হাতে ধরা পরেন রিমন। হাসু তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার কথা বললে তাকে লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে এবং ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে রিমন।
এই ঘটনার দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে নিহত হাসুর ঘরে সিঁদ কেটে রাখে রিমন। যাতে মানুষ মনে করে চোর চুরি করতে এসে তাকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের মূল ঘটনা উদঘাটন করতে চেষ্টা চালায় পুলিশ। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘাতক রিমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তার দেয়া তথ্য মতে সেই তাবিজ, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাবল, দা ও রক্ত মাখা শার্ট ও লুঙ্গি টয়লেটের ট্যাংকি থেকে জব্দ করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অপরদিকে আতাইকুলা থানার সাদুল্লাহপুরের দড়ি শ্রীকোল এলাকায় আকমল হোসেন (৪৫) এবং জোসনা খাতুনের বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক দেখে ফেলেন একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুস (৫৫)। উক্ত ঘটনা এলাকার বিভিন্ন জনকে বলায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আকমল। গত ৮ আগস্ট আকমলকে কৌশলে প্রেমিকা জোসনার বাড়ির পাশে ডেকে নিয়ে গামছার সাহায্যে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। লাশটি গুম করে পাশের টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকের ভিতরে রেখে আসেন। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ২১ আগস্ট ঝিনাইদহ থেকে গ্রেফতারের পর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন আকমল হোসেনে।
এছাড়া আত্মসমর্পনের পরও বিভিন্ন সময় অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আতাইকুলা থানার গয়েশবাড়ি এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম নামের এক চরমপন্থি নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত রফিকুল ৭টি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম, সদর সার্কেল ডি এম হাসিবুল বেনজীর, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) আরজুমা আকতার ও আতাইকুলা থানার ওসি হাফিজুর রহমানসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।